ঢাকা

চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়নের পদ্ধতি: সিএমজি সম্পাদকীয়

  • হালনাগাদ : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • দেখেছে : 48
চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়নের পদ্ধতি: সিএমজি সম্পাদকীয় চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়নের পদ্ধতি: সিএমজি সম্পাদকীয়

গতকাল (মঙ্গলবার) চীন সরকার নভেম্বর মাসের অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ করার পর, অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে যে, চীনের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে। তারা মনে করে,  ‘একাধিক খাতে ইতিবাচক সংকেত দেখা যায়’, ‘অর্থনৈতিক উপাত্ত সুষ্ঠু রয়েছে’, ‘বছরের উন্নতির লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে’। বিশ্বের অনেক মানুষ মনে করছে, চীনের অর্থনীতি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে, সম্প্রতি আয়োজিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতি বিষয়ক সম্মেলনের ধারণা ও সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। লরিয়াল উত্তর এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট বুইনি সিএমজিকে জানান, বিশ্বের অর্থনীতি কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। তারপরও, তারা সবসময় চীনের অর্থনীতি ও ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা রাখে।

উপাত্ত থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, নভেম্বর মাসে চীনের অর্থনীতির চলাচল আগের প্রবণতায় বজায় রেখে উন্নত হচ্ছে। আর্থিক প্রবাহেরগুণগতমানও অব্যাহত উন্নত হচ্ছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংকেত হচ্ছে উদ্ভাবনের প্রাণশক্তি আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। একদিকে, গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত পণ্যের উন্নতির গতি আগের চেয়ে আরও দ্রুততর হয়েছে। যেমন নতুন জ্বালানির যানবহনসহ অনেক খাত রয়েছে। অন্যদিকে, উচ্চ প্রযুক্তিগত পণ্যের প্রবৃদ্ধির প্রবণতাও অনেক সুষ্ঠু। গত ১১ মাসে, উচ্চ প্রযুক্তিগত উৎপাদন শিল্প ও প্রযুক্তিগত পরিষেবা শিল্প প্রকৃতভাবে ৮.২ শতাংশ ও ১০.২ শতাংশ উন্নত হয়েছে। এসব বিষয়ে দেখা যায়, চীনের প্রযুক্তির উদ্ভাবন অর্থনীতির উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়ন এগিয়ে নেয়।

ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা স্থিরভাবে বাড়ছে এটি আরেকটি ইতিবাচক সংকেত। গেল ১১ মাসে, চীনের খুচরা বিক্রি ৪৪.২৭ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩.৫ শতাংশ বেড়েছে। তার অর্থ-চীনের ভোক্তা-বাজার স্থিতিশীলভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, নভেম্বরের চীনের অর্থনৈতিক অর্জন সহজ ছিল না। এ বছরে, আন্তর্জাতিক পরিবেশ জটিল এবং কঠিন, বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ধীর গতির হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে, এত বেশি চাপের মধ্যে চীনের অর্থনীতি কিভাবে স্থিতিশীল অগ্রগতি অর্জন করতে পারে? বিশেষজ্ঞ ওয়াং সিয়াও সং সিএমজিকে জানান, এর কারণ হচ্ছে চীনের অর্থনীতির ভিত্তি স্থিতিশীল, সুবিধা বেশি, দৃঢ়তা শক্তিশালী, সম্ভাবনা বড় ও দীর্ঘমেয়াদী সুষ্ঠুর প্রধান প্রবণতা পরিবর্তন হয়নি। অন্যদিকে, ইতিবাচক নীতির অব্যাহত বাস্তবায়নে, দেশের অর্থনীতির চলাচলের ইতিবাচক উপাদান অব্যহতভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, চীন ও বিশ্বের নানা দেশের সাথে স্থিতিশীল কূটনৈতিক সম্পর্ক চীন ও অন্য দেশ ও অঞ্চলের সাথে অর্থনৈতিক যোগাযোগের জন্য সুষ্ঠু ভিত্তি সৃষ্টি করেছে। এর পাশাপাশি, ‘বেল্ট আন্ড রোড’ সহযোগিতা এগিয়ে নেয়া এবং ব্রিক্স দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা বাড়াতে চীন অব্যাহতভাবে কাজ করছে। যা অর্থ-বাণিজ্যের বন্ধু-বলয় সম্প্রসারণ করছে। চলতি বছর আয়োজিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতি বিষয়ক সম্মেলনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ আরও সম্প্রসারণ করা হবে, বিদেশি বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ আরও স্থিতিশীল করা হবে। এতে বিশ্ববাসী অনেক ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। মরগান স্ট্যানলি’র চীনের প্রধান অর্থনীতিবিদ সিং চি ছিয়াং বলেছেন, বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের প্রতি চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব ও ব্যবস্থা অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের চীনের প্রতি অনেক ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।জটিল ও পরিবর্তনশীল বর্তমান বিশ্বে, সোনার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আস্থা। সম্প্রতি চীনের অর্থনীতিতে ধারাবাহিক ইতিবাচক সংকেতে দেখা যায়। ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির নির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নে চীনের আস্থা রয়েছে। বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি হিসেবে চীন অব্যাহতভাবে ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের এ ধরনের ইতিবাচক সংকেত যত বাড়বে, ততই সুযোগ-সুবিধা তৈরি হবে। 

সূত্র সিআরআই